আলসেমি দূর করার ৫টি উপায় | আলসেমি থেকে মুক্তি ও এনার্জি বাড়ানোর গাইড ?

প্রতিদিন সকালে আপনি ঘুম থেকে উঠার পর ঠিক করেন. আজ থেকে পরিবর্তন হয়ে যাব। কিন্তু কয়েক ঘন্টা পরেই সেই এনার্জি শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থা শুধু আপনারই না, আমাদের প্রায় সবার।
আত্মবিশ্বাসী এক তরুণ নিজের আলসেমির শৃঙ্খল ভাঙছে, তার চারপাশে জ্বলজ্বল করা এনার্জি, ভবিষ্যতমুখী ব্যাকগ্রাউন্ডে মোটিভেশনাল আবহ — আলফা এনার্জি ও অনুপ্রেরণামূলক ভাব প্রকাশ করছে।

আজকে আপনি এই লেখাটি পড়ে জানতে পারবেন আলসেমি থেকে বাঁচার কার্যকর পাঁচটি উপায়। যা আপনাকে আস্তে আস্তে বদলে দেবে।

১. আলসেমির আসল কারণ খুঁজে বের করুন।

আইছে আমি কোন অভ্যাস না এটা এক ধরনের মানসিক সমস্যা।

আমরা অনেক সময় অভ্যাস ভেবে ফেলি। কিন্তু এটা আসলে আপনার মস্তিষ্কের একটা ভুল ধারণা।'' আমি ক্লান্ত'' আমি মোটিভেশন হারিয়ে ফেলেছি'', '' আমার দিকনির্দেশনা দেওয়ার মতো কেউ নেই''।

আপনি যখন কাজ শুরু করতে চান, কিন্তু কিন্তু আপনি জানেন না সে কাজটি কেন করছেন আপনি বা কাজটার কি অবস্থা, তখন নিজের মনের ভিতর প্রতিরোধ তৈরি করেন যে এটা আলসেমি।
সমাধান:

নিজের প্রতিদিন প্রশ্ন করেন'' আমি এটা কেন করতে চাই?'' যখন আপনার কাজে করার পেছনের কারণ পরিষ্কার হবে, আপনার মস্তিষ্কের মেয়েকে বদলে এনার্জি তে।

২. নিজের ডেলি রুটিন কে ঠিক করুন।

আপনার জীবনের ছোট অভ্যাসগুলো বড় পরিবর্তন নেই।

মানুষ ভাবে নিজের জীবনে পরিবর্তন আনার জন্য বিশাল অনেক কিছু করতে হবে। কিন্তু আসলে সত্য কথা হলো ছোট ছোট অভ্যাসগুলো আমাদের জীবনে অনেক বড় পরিবর্তন আনে। 

সকাল পাঁচটার মধ্যে ঘুম থেকে উঠে যেতে হবে, ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলেন। 15 মিনিট মেডিটেশন করেন বা নিজের নিঃশ্বাসে মনোযোগ দেন। এরপর ৩০ মিনিট মতো কিছু ব্যায়াম করেন এবং দোয়া পড়েন।

প্র্যাকটিক্যাল কিছু টিপস:
  • রাতে ঘুমানোর আগে পরের দিনে কি কি কাজ করবেন সেগুলোর একটি লিস্ট তৈরি করুন।
  • ঘুমানোর এক আধঘন্টা মত আগে নিজের কাছে থেকে মোবাইল ফোন সরিয়ে রাখুন।ঘুম থেকে উঠে প্রথম এক ঘন্টা সোশ্যাল মিডিয়াতে স্কুল করা থেকে বিরত থাকুন।
  • এ রুটিনটি আপনার ভেতর থেকে আলসেমি আস্তে আস্তে বের করে দেবে।

৩. নিজের জীবনের আসল লক্ষ্য নির্ধারণ করেন এবং সেটাকে ছোট ছোট ভাগ করেন।

বড় বড় লক্ষ্য দেখলে আমাদের ভয় লাগে,, ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করলে কাজ করতে অসুবিধা হয় না।

আপনি হয়তো ভাবছেন'' আমি সফল হতে চাই'' আমি অনেক টাকা ইনকাম করতে চাই।'' কিন্তু আপনার মস্তিষ্ক এত বড় লক্ষ্য দেখে ভয় পেয়ে যায়, কারণ এটা আপনার মস্তিষ্কের কাছে অবাস্তব মনে হয়। তাই আপনার জীবনের বড় বড় লক্ষ্য কে ছোট ছোট ধাপে ভেঙ্গে ফেলুন।

উদাহরণ:
  • যেমন আমি প্রতিদিন এক ঘন্টা ইংরেজি শিখব।আমি প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করবো।
  • আমি প্রতিদিন ১০ পাতা করে বই পড়বো।
  • প্রতিদিন ছোট ছোট ধাপগুলো আপনাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। 
  • প্রতিদিনের আপনি একটু একটু করে নিজের লক্ষ্য দেখে পৌঁছাবেন, আর এটি আপনাকে আলসেমি থেকে দূরে রাখবে।

৪. আপনার মনোযোগ নষ্টকারী জিনিসগুলো থেকে দূরে থাকুন।

আপনার সময়ই হচ্ছে আপনার মনোবল।

আজকের সময় সবচেয়ে বড় আলসেমির উৎস হল, অতিরিক্ত ডকুমেন্ট। আপনি যখন TickTok, instagram, youtube shorts, বা ফেসবুক রিল করেন, তখন আপনার মাথার ভিতরে অতিরিক্ত পরিমাণে রিলিজ হয় ।

 আপনাকে খুশির অনুভূতি দেয়। কিন্তু কাজ করার সময় সে আনন্দ না পাওয়ায় আপনি বিরক্ত হয়ে পড়েন এটাকে বলে “ডোপামিন ড্রেইন”।

সমাধান:
  • প্রয়োজন বাদে মোবাইল না ব্যবহার করা।
  • নোটিফিকেশন অফ রাখা।কাজে মনোযোগ বাড়ানোর জন্য 25 মিনিট কাজ করার পরে ৫ মিনিট ব্রেক নিবেন।
  • সপ্তাহে একদিন ডিজিটাল ডিটেক্স করেন।
  • যখন আপনি আপনার কাজে মনোযোগী হবেন, তখন আপনার মধ্যে থেকে আলসেমি স্বাভাবিকভাবেই কমে যাবে।

৫. শরীরকে শক্ত রাখেন, কারণ মন শরীরের উপর অনেকটা নির্ভরশীল।

শক্তিশালী শরীর মানেই শক্তিশালী মন।

আপনি যতই মানসিকভাবে শক্তিশালী হতে চান না কেন, যদি আপনার শরীর দুর্বল থাকে তাহলে আপনার ভিতরে আলসেমি এমনি এমনি জমে যাবে। শরীরের ভেতরে যখন অক্সিজেনের ঘাটতি হয় বা রক্ত সঞ্চালন কমে ,তখন মনো দুর্বল হয়ে যায়।

প্র্যাকটিক্যাল টিপস:

  • প্রতিদিন সকালে অন্তত ৩০ মিনিট মতো হাঁটেন বা দৌড়ান।
  • যান ফুড, চিনি আর অতিরিক্ত ক্যাফেন থেকে দূরে থাকেন।
  • পর্যাপ্ত পানি খান ( দিনে কমপক্ষে তিন লিটার )।
  • সকালবেলা রোদের ভেতরে অন্তত 10 মিনিট দাঁড়ান, এটি আপনার শরীরে Vitamin D তৈরি করতে সাহায্য করবে।
যখন শরীর ঠিক থাকবে, তখন আপনার কাজের প্রতি আগ্রহ ও এনার্জি এমনি এমনিতেই বেড়ে যাবে।

৬. নিজেকে প্রতিদিন আগের থেকে উন্নত করার প্রতিজ্ঞা করেন।

আপনার জীবনের উন্নতি হল আলসেমির আসল ওষুধ।

আপনার জীবনে যখন উত্তের জন্য থাকেনা তখনই আপনাকে চেপে ধরে। আপনি যদি প্রতিদিন কিছু না কিছু নতুন না শেখেন তাহলে আলসেমি থেকে বের হতে পারবেন না।

 তাই নতুন কোন বই পড়েন, কোন স্কিল শেখেন, নিজের উন্নতির জন্য কোন কাজ করেন — তাহলে আপনি এই চক্রটি থেকে বের হতে পারবেন।

এগুলো করতে পারেন:
  • প্রতিদিন সকাল বেলা নিজেকে জিজ্ঞাসা করেন — '' আজ আমি কিভাবে গতকালকের চেয়ে ১ % উন্নত হতে পারি?
  • এটাই'' Alpha Mindset" — যেখানে আইটেমের কোন জায়গা নাই।
মন্তব্য:

আলসেমি কোন ধরনের অভিশাপ না। এটা শুধু এক ধরনের সংকে ত যে তুমি তোমার জীবনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছ, তা বাদ দেয়ার কিছুই না। 

কিন্তু. আজ থেকে আপনি আপনার জীবনে নিয়ন্ত্রণ সম্পন্ন রূপে নিজের হাতে নিয়ে নেবেন। ছোট ছোট কিছু পদক্ষেপ নিন,  নিজের শরীরে এবং বোনকে শক্ত রাখেন। আর প্রতিদিন অল্প অল্প করে নিজেকে উন্নত করেন।

💬 তোমার কী মনে হয়? নিচে কমেন্ট করে জানাও, তুমি কীভাবে আলসেমি দূর করো!
🔔 আরও অনুপ্রেরণামূলক লেখা পেতে আমাদের ব্লগ ফলো করো – Alphag Academy
Next Post
No Comment
Add Comment
comment url